প্রতিঠানের ইতিহাস

Nasheed Poster

Arraji International Madrasah-এর যাত্রা শুরু হয় ২০১৫ সালে একটি মহৎ উদ্দেশ্যকে কেন্দ্র করে—একটি এমন ইসলামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা, যেখানে কুরআন ও সুন্নাহর প্রকৃত শিক্ষা থাকবে, সেই সাথে থাকবে যুগোপযোগী সাধারণ জ্ঞান ও আধুনিক দক্ষতা অর্জনের সুযোগ। ইসলামি শিক্ষা ব্যবস্থায় বৈচিত্র্য, স্বচ্ছতা ও গুণগত মানের ঘাটতি পূরণ করতেই এই প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠার শুরুতেই মাদ্রাসাটির মূলনীতি নির্ধারণ করা হয়েছিল: “ইমান, জ্ঞান ও আমল—এই তিনটির সঠিক ভারসাম্যের ওপর ভিত্তি করে আদর্শ প্রজন্ম গড়ে তোলা।

প্রাথমিকভাবে মাত্র একটি ছোট ভবনে, ৩ জন শিক্ষক ও ১৫ জন ছাত্র নিয়ে যাত্রা শুরু হয়। ছাত্ররা থাকতেন সাদামাটা ঘরে, শিক্ষকদের বেতন ছিল প্রতীকী, কিন্তু লক্ষ্য ছিল বিশাল। তারা কুরআনের হিফজ ও নূরানী শিক্ষার পাশাপাশি ইসলামি আদর্শ ও নৈতিকতাকে ছাত্রদের জীবনে বাস্তবভাবে অনুসরণের দিকে উৎসাহিত করতেন। অল্প সময়েই স্থানীয় মানুষের কাছে প্রতিষ্ঠানের সুনাম ছড়িয়ে পড়ে এবং শিক্ষার্থী সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে।

২০১৭ সালের মধ্যে মাদ্রাসার নিজস্ব জায়গায় একটি বড় ভবনের নির্মাণ শুরু হয় এবং সেখানে আবাসিক সুবিধাসহ পূর্ণাঙ্গ হিফজ বিভাগ, আলিম বিভাগ ও প্রাথমিক সাধারণ শিক্ষা বিভাগ চালু করা হয়। প্রতিটি বিভাগে শিক্ষার্থীদের জন্য নির্দিষ্ট কারিকুলাম, মূল্যায়ন পদ্ধতি এবং দৈনন্দিন রুটিন প্রণয়ন করা হয়।

২০১৯ সালে মাদ্রাসা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কার্যক্রম বিস্তারের পরিকল্পনা গ্রহণ করে। বিশেষ করে যারা দেশের বাইরে থাকেন, তাদের সন্তানদের জন্য “অনলাইন ইসলামিক কোর্স” চালু করা হয়। এই উদ্যোগ দ্রুতই জনপ্রিয়তা অর্জন করে এবং যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, সৌদি আরব, মালয়েশিয়া ও কানাডার অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের অনলাইন ক্লাসে যুক্ত করতে শুরু করেন।

আমাদের পাঠ্যক্রম কুরআন হিফজ, আলিম/আলিমা কোর্স, নূরানী ও প্রাথমিক কুরআন শিক্ষা, আরবি ও ইংরেজি ভাষা শিক্ষা, এবং প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ের সাধারণ শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করে। প্রতিটি শিক্ষার্থীকে ইসলামি শিষ্টাচার, নৈতিকতা, সহনশীলতা এবং নেতৃত্বের গুণাবলী শেখানো হয় যাতে তারা সমাজে ইতিবাচক প্রভাব রাখতে পারে।

শুধু শিক্ষা নয়, আমরা গুরুত্ব দেই বাস্তব জীবনে ইসলামের প্রয়োগ, ব্যক্তিত্ব গঠনে প্রশিক্ষণ এবং আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে দ্বীনের ভারসাম্য বজায় রাখার ওপর। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই মাদ্রাসাটি অরাজনৈতিক, গবেষণাভিত্তিক এবং আখিরাতমুখী নীতিতে পরিচালিত হয়ে আসছে।

আমাদের লক্ষ্য শুধু একজন হাফেজ বা আলেম তৈরি করা নয়—আমাদের লক্ষ্য একজন দায়িত্বশীল মুসলিম তৈরি করা, যিনি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ইসলামিক মূল্যবোধ অনুসরণ করে সমাজে নেতৃত্ব দিতে পারেন।

এই দীর্ঘ সফরে আমাদের পাশে থেকেছেন হাজারো অভিভাবক, শিক্ষক, দাতা এবং শুভাকাঙ্ক্ষী। আজ আমরা গর্বের সঙ্গে বলতে পারি—Arraji International Madrasah শুধু একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়, বরং এটি একটি আন্দোলন, একটি আলো, একটি আত্মার উন্নয়ন কেন্দ্র, যেখানে দুনিয়া ও আখিরাতের সমন্বয়ে গড়ে তোলা হয় সত্যিকারের মানুষ।

আমাদের যাত্রা শুরু হয়েছিল একটি স্বপ্ন নিয়ে—আর আজ সেই স্বপ্ন বাস্তব রূপ নিচ্ছে শত শত ছাত্রের আলোকিত ভবিষ্যতের মাধ্যমে।

about

প্রতিষ্ঠাতার বাণী

আলহামদুলিল্লাহ। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তাআলার, যিনি আমাদের দ্বীন প্রচার ও শিক্ষার খেদমতে নিয়োজিত হওয়ার তাওফিক দিয়েছেন। Arraji International Madrasah প্রতিষ্ঠার পেছনে একটি স্বপ্ন কাজ করেছিল—একটি এমন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা, যেখানে কুরআন ও সুন্নাহর বিশুদ্ধ জ্ঞান, ইসলামি আদর্শ, চরিত্র গঠন এবং আধুনিক জ্ঞানের সমন্বয় থাকবে। আমরা এমন একটি প্রজন্ম তৈরি করতে চাই যারা শুধু হাফেজ বা আলেম নয়, বরং হবে সৎ, নেতৃত্বগুণসম্পন্ন, চিন্তাশীল ও সমাজের জন্য কল্যাণকর মানুষ।

প্রতিদিন আমরা দেখি কত শিশুর মাঝে আল্লাহ প্রদত্ত অপার মেধা রয়েছে, কিন্তু সঠিক দিকনির্দেশনার অভাবে তারা পথ হারিয়ে ফেলে। আমাদের লক্ষ্য সেই পথভ্রষ্টতাকে রোধ করে আলোকিত ও ভারসাম্যপূর্ণ শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে একটি ঈমানদার, সচেতন ও আত্মবিশ্বাসী প্রজন্ম তৈরি করা।

Arraji International Madrasah একটি অরাজনৈতিক, গবেষণাভিত্তিক ও আকিদাভিত্তিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করে। আমরা বিশ্বাস করি, শিক্ষা শুধু পরীক্ষার ফলাফল নয়—এটি একজন মানুষের আত্মিক, নৈতিক ও সামাজিক গঠনের এক দীর্ঘ প্রক্রিয়া। এই বিশ্বাস থেকেই আমরা প্রতিটি ছাত্রের জন্য নিরাপদ পরিবেশ, আলোকিত শিক্ষকের দিকনির্দেশনা এবং ইসলামের প্রকৃত রূপরেখা অনুযায়ী জীবন গঠনের ব্যবস্থা রাখি।

মাওলানা সাদিদ :)

প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক

আমাদের প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে সম্মানিত ব্যক্তিদের কিছু কথা

Arraji International Madrasah নিঃসন্দেহে একটি সহিহমানহাজী শিক্ষার প্রতিষ্ঠান। তারা যেমন হিফজ ও আলিম কোর্সে মান বজায় রেখেছে, তেমনি আধুনিক শিক্ষার দিকেও নজর দিয়েছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে এই প্রতিষ্ঠানের প্রতি সন্তুষ্ট।

মাওলানা রফিকুল ইসলাম

শায়েখুল হাদিস, জামিয়া কাসিমিয়া রামপুরা, ঢাকা

আমি প্রথম এই প্রতিষ্ঠান দেখেছি, শিক্ষার্থীদের মাঝে শৃঙ্খলা, আদব ও ইলমের প্রতি আগ্রহ অত্যন্ত চমৎকার। এ ধরণের প্রতিষ্ঠান আমাদের দেশে খুবই প্রয়োজন।

প্রফেসর ড. কামরুল হাসান

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

Arraji Madrasah একটি আদর্শ ইসলামী শিক্ষা কেন্দ্র, যেখানে আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গিতে দ্বীনি ও দুনিয়ার দুটোই শিখানো হচ্ছে। আমি প্রবাসী মুসলিমদের কাছে এটি পরামর্শ করি।

মুহ্তাদি নাজমুল হক

মুক্তধারা, জার্মান বেসড বাংলাদেশি

আমি ব্যক্তিগতভাবে Arraji মাদরাসার নীতিমালা ও পড়াশোনার পরিবেশ দেখে অত্যন্ত সন্তুষ্ট। আমার দ্বীনি ও দুনিয়া—দু'টোই চাহিদার ভালো সমন্বয় দেখা যায়।

হাফেজ মাওলানা সালেহ বিন রহীম

ইমাম ও খতীব, লন্ডন ইস্ট ইসলামিক সেন্টার, যুক্তরাজ্য

আমি নিজেও তামিলদার যে, Arraji Madrasah ইউরোপার পরিমণ্ডলে এমন একটি নতুন, সুন্দর শিক্ষানীতির ধারাবাহিক উদাহরণ এবং আধুনিকতার জীবন্ত মডেল হতে পারে ইন শা আল্লাহ।

মাওলানা আবু ইউসুফ জামান

উপাধ্যক্ষ, মারকাজুল উলুম চট্টগ্রাম

এমন একটি প্রতিষ্ঠান, যেখানেই দ্বীনের পাশাপাশি জ্ঞান থাকে, সেখানে সমাজের পরিবর্তন শুরু হয়—এটি আমি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও প্রাসঙ্গিক মনে করি।

ড. আবদুল্লাহ আল ফারুক

অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

Loading...

প্রতিঠান সম্পর্কে আপনাদের কিছু প্রশ্নউত্তর

আমরা ইসলামি ও সাধারণ শিক্ষার সমন্বিত কারিকুলাম অনুসরণ করি। এতে রয়েছে: হিফজুল কুরআন, আলিম/আলিমা কোর্স, নূরানী শিক্ষা, আরবি ভাষা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞানসহ আধুনিক বিষয়সমূহ।